ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ , ১ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঋতুরাজ বসন্তকে বরণ করতে প্রস্তুত শিমুল বাগান

স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় : ১৩-০২-২০২৫ ০৩:৩২:২৮ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ১৩-০২-২০২৫ ০৫:৪০:২৫ অপরাহ্ন
ঋতুরাজ বসন্তকে বরণ করতে প্রস্তুত শিমুল বাগান ​ছবি: সংগৃহীত
শীতের আমেজ শেষে আসছে বসন্ত। পাতা ঝরার বিবর্ণ প্রকৃতিতে জেগে উঠতে শুরু করেছে নতুন প্রাণ। বসন্তের ফুল শিমুল ফুটতে শুরু করেছে। শিমুল ফুলে জানান দিচ্ছে ঋতুরাজ বসন্তের আগমনি বার্তা। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় অবস্থিত দেশের সর্ববৃহৎ শিমুল বাগানে দেখা দিয়েছে সাজ সাজ রব। চারিদিকে ফুলে ফুলে ছেয়ে গেছে বিশাল বিস্তৃত ১০০ বিঘা জমির ওপর এ শিমুল বাগান।

বসন্ত বরণ ও ভালোবাসা দিবস উদ্যাপনের জন্য প্রকৃতিপ্রেমী ও নবদম্পতিদের কাছে পছন্দের স্থান এ শিমুল বাগান। বসন্তের আগমনকে কেন্দ্র করে বছরের এ সময়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রকৃতিপ্রেমীরা যায় সেখানে।

প্রতি বছর ফাল্গুন মাসের সপ্তাহখানেক আগে থেকেই সারি সারি গাছের ডালে ফুটতে থাকে শিমুল ফুল। ফুল ফুটার সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে যায় প্রকৃতি প্রেমীদের আনাগোনা। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি, ইতোমধ্যে প্রতিদিন হাজারো দর্শনার্থী আসতে শুরু করেছে এ বাগানে। তবে পহেলা ফাগুন ও ভালোবাসা দিবসে দর্শনার্থীদের উপস্থিতির পরিমাণ অন্যান্য দিনের তুলনায় বহুগুণ বেড়ে যায়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে দেশের সর্ববৃহৎ শিমুল বাগানে সারি সারি হাজার হাজার গাছে ফুটে আছে শিমুল ফুল। গাছ থেকে ঝরে মাটিতে পড়ে থাকা রক্ত রাঙা শিমুল ফুল দেখে মনে হয় যেন লাল ফুলের গালিচা। ১৫/২০ জন শিশু-কিশোর পর্যটকদের জন্য শিমুল ফুলের মালা তৈরি করে বিক্রি করছেন। কেউ তাজা শিমুল ফুল দিয়ে ভালোবাসার ফ্রেম তৈরি করে রেখেছেন। পর্যটকদের বাড়তি আনন্দ দিতে এ বাগানে রয়েছে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা বাড়ানো হয়েছে।

জানা গেছে, প্রায় ২৩ বছর আগে তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদিন নিজ উদ্যোগে পার্শ্ববর্তী উত্তর বড়দল ইউনিয়নের যাদুকাটা নদীর তীরে মেঘালয় পাহাড় ঘেঁষা মানিগাওঁ গ্রাম সংলগ্ন ১০০ বিঘা জমি জুড়ে বিশাল এক শিমুল বাগান গড়ে তোলেন। রূপের নদী যাদুকাটার এক পাড়ে ভারতের মেঘালয় পাহাড় অন্য পাড়ে বিশাল এ শিমুল বাগান। তৎকালীন সময়ে জেলা জুড়ে পরিচিত এ বৃক্ষপ্রেমী নিজের প্রায় ১০০ বিঘা জমিতে তিন হাজার শিমুল গাছ রোপণ করেন। ক্ষণে ক্ষণে বেড়ে ওঠা গাছগুলো এখন হয়ে উঠেছে সারা দেশের মানুষের কাছে পরিচিত এক নাম ‘শিমুল বাগান’। বাগানটিতে এবার সৌন্দর্যবর্ধনে করা হচ্ছে বিভিন্ন আঙ্গিকে। বসার সু-ব্যবস্থা করা হয়েছে। সে সঙ্গে বাগানের ভেতরেই ক্যান্টিন স্থাপন করা হয়েছে।

বাগান কর্তৃপক্ষ জানায়, ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে বাগানে ফুল ফুটতে শুরু করে। ইতোমধ্যে ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পর্যটকরা আসছেন বাগানে। তবে ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবসে সবচেয়ে বেশি পর্যটক আসবেন বলে তারা ধারণা করছেন তারা।

সুনামগঞ্জ শহর থেকে বাগানে ঘুরতে আসা শাওন, সুমন ও রবিনসহ কয়েকজন বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাগানে ফুল ফোটার পোস্ট দেখে আমরা বন্ধুরা ঘুরতে এসেছি। এসে খুবই ভালো লাগছে। আমাদের সবার উচিত ভালোবাসা দিবসে প্রিয়জনকে নিয়ে এ বাগানে ঘুরে যাওয়া।

বাগানে ঘুরতে আসা মাহিন আহমেদ নামে একজন বলেন, একটি ব্যতিক্রম পর্যটন স্পট। নদী, পাহাড় আর শিমুল বাগান এখানে মিলে মিশে একাকার। বাগানটি দেখতে অসাধারণ। এত বড় শিমুল বাগান দেশের অন্য কোথাও নাই। বাগানের ভেতরে ঢুকলে অন্যরকম এক ভালো লাগা কাজ করে। ভালোবাসা দিবসে বসন্ত বরণ করতে ফুলের সৌন্দর্য ঘেরা এ শিমুল বাগানে আসতেই হবে।

বাগান মালিক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন বলেন, পর্যটকদের সুবিধার জন্য বাগানে ক্যান্টিন ক্যাফে সার্ভিসসহ বিভিন্ন সেবা চালু করা হয়েছে। এ বছর আরও কিছু সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ করা হয়েছে এবং বসার সু-ব্যবস্থা করা হয়েছে।

তাহিরপুর থানার ওসি দেলোয়ার হোসেন বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ সব সময় তৎপর রয়েছে। বিশেষ বিশেষ দিনগুলোতে বাগান ও আশপাশের এলাকায় পুলিশ টহল দিয়ে থাকে।

বাংলাস্কুপ/প্রতিনিধি/এনআইএন/এসকে


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স


এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ